Tuesday, October 7, 2025
জনসাধারণের জন্য ওরাং জাতীয় উদ্যান উন্মুক্ত করে দেওয়া হলো
গুয়াহাটি ৭ অক্টোবর - ওরাং জাতীয় উদ্যান চলতি বছরের ইকো-ট্যুরিজম মরশুমের জন্য ৬ অক্টোবর, থেকে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এই দিন থেকে উদ্যানে হাতির সাফারি ও অন্যান্য পর্যটন কার্যক্রমও চালু থাকবে।
ওরাং জাতীয় উদ্যানটি আসামের দরং ও শোণিতপুর জেলায় ব্রহ্মপুত্র নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত একটি জাতীয় উদ্যান। এর আয়তন প্রায় ৭৯.২৮ বর্গকিলোমিটার (প্রায় ৩০.৬১ বর্গমাইল)। ১৯৮৫ সালে এটি প্রথমে অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়, পরে ১৯৯৯ সালের ১৩ এপ্রিল এটিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা দেওয়া হয়।
উদ্যানটি “মিনি কাজিরাঙা” নামে পরিচিত, কারণ এর জলাভূমি, খাল-বিল ও তৃণভূমির ভূদৃশ্য কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের মতো এখানে একই ধরনের বন্যপ্রাণী দেখা যায় — যেমন একশৃঙ্গ গণ্ডার এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এটি ২০১৬ সাল থেকে ভারতের ৪৯তম টাইগার রিজার্ভ হিসেবেও স্বীকৃত।
উদ্যানটির ভৌগোলিক গঠন গঠিত হয়েছে পাখনই, বেলসিরি ও ধনসিরি নদীর গঠিত ব্রহ্মপুত্রের বন্যা প্লাবিত সমভূমি থেকে। এই বন্যাপ্রবণ অঞ্চলগুলিতে ১২টি প্রাকৃতিক জলাভূমি ২৬টি কৃত্রিম জলাশয় রয়েছে। ভূমি প্রধানত আর্দ্র পর্ণমোচী বন, জলাভূমি বন, অলুভিয়াল তৃণভূমি, সাভান্না ঘাসভূমি এবং বালুময় অঞ্চলে বিভক্ত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা ৪৫ থেকে ৭০ মিটারের মধ্যে।
প্রাণীজগতের মধ্যে একশৃঙ্গ গণ্ডার, পিগমি হগ, এশীয় হাতি, বন্য মহিষ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হগ ডিয়ার এবং ২২২টিরও বেশি প্রজাতির পাখি দেখা যায়, যার মধ্যে রয়েছে বহু পরিযায়ী ও জলচর পাখি যেমন স্পট-বিল্ড পেলিক্যান ও গ্রেটার অ্যাডজুট্যান্ট স্টর্ক। সরীসৃপদের মধ্যে ভারতীয় রক পাইথন, কিং কোবরা ও মনিটর লিজার্ডও পাওয়া যায়।
ওরাং জাতীয় উদ্যানটি ব্রহ্মপুত্রের উত্তর তীরে একমাত্র গণ্ডার অভয়াশ্রম হিসেবে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ , এটি মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজনন ক্ষেত্র। উদ্যানটি চারদিক থেকে জনবসতিপূর্ণ গ্রাম দ্বারা বেষ্টিত, যা এর উপর মানবসৃষ্ট চাপ সৃষ্টি করে।
উদ্যান পরিদর্শনের সর্বোত্তম সময় নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত। নিকটতম বিমানবন্দর হলো তেজপুরের সালোনিবাড়ি (প্রায় ৮০ কিমি দূরে) ও গুয়াহাটি থেকে (প্রায় ১৫০ কিমি দূরে)। উদ্যানের কাছাকাছি থাকার জন্য সাতসিমালু রেস্ট হাউস, সিলবরি রেস্ট হাউস এবং প্রশান্তি ট্যুরিস্ট লজের ব্যবস্থা রয়েছে।

No comments:
Post a Comment