Tuesday, October 7, 2025
অসম সরকারের “শ্রদ্ধাঞ্জলি” প্রকল্পের উদ্ভোধন: বহিঃরাজ্যে মৃত্যুবরণ করা অসম সন্তানদের মরদেহ নিজ রাজ্যে ফিরিয়ে আনবে সরকার
গুয়াহাটি, ৭ অক্টোবরঃ এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ভাষণ প্রদান করে মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ব্যক্ত করেন যে, কর্মসূত্রে বহিঃরাজ্যে যাওয়া অসমের সন্তানদের যদি কোনো কারণে মৃত্যু ঘটে, তবে তাঁদের মরদেহ শ্রদ্ধার সঙ্গে নিজ রাজ্যে বা পরিবারের কাছে ফিরিয়ে আনার জন্য অসম সরকার একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে ১ অক্টোবরের পরিবর্তে, ৬ অক্টোবর, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করে “শ্রদ্ধাঞ্জলি” নামের এই প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, প্রকল্পটি শুরু হওয়ার আগেও সরকার অনানুষ্ঠানিকভাবে এই সেবা প্রদান করে আসছিল এবং চলতি বছরে ২৪ জন অসম সন্তানের মরদেহ রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই সেবা এখন থেকে আনুষ্ঠানিক রূপ পেল। তিনি বলেন, অসমের বাইরে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রী বা অল্প বেতনে কর্মরত অসমের যুবক-যুবতীদের জন্যই এই প্রকল্প প্রযোজ্য হবে। বহিঃরাজ্যে কোনো অসমীয় ব্যক্তির মৃত্যু ঘটলে, পরিবার রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবে। মৃত্যুর খবর জানাতে ইচ্ছুক ব্যক্তি পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বর ১১২ বা বিশেষ শাখার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ০৩৬১-২৩৮১৫১১-এ ফোন করতে পারবেন। এছাড়া সেবা সেতু পোর্টালের মাধ্যমে বা হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ৯১৮১০-১৪৮৮৮-এও তথ্য জানানো যাবে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রয়োজনে মুখ্য সচিব বা মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়েও মৃত্যুর তথ্য জানানো যেতে পারে।
তিনি জানান, মৃত্যু সাধারণত দুই প্রকার – স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক। যদি কোনো অসম সন্তান বহিঃরাজ্যে হত্যাকাণ্ড বা দুর্ঘটনায় মারা যায়, তবে সেই পরিবারকে আইনগত সহায়তা প্রদান করবে অসম পুলিশের বিশেষ শাখা। প্রয়োজন হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট রাজ্যে গিয়ে মরদেহ শ্রদ্ধার সঙ্গে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থাও করবেন এবং প্রবাসী অসমবাসীদের সহায়তাও নিশ্চিত করবেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকারের গৃহীত বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের মধ্যে “শ্রদ্ধাঞ্জলি” একটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ। বহিঃরাজ্যে নিরাপত্তারক্ষী বা অল্প বেতনের চাকরিতে নিযুক্ত বহু তরুণ-তরুণী মারা গেলে তাঁদের মরদেহ ফিরিয়ে আনতে ৪০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। ফলে অনেক পিতা-মাতা শেষবারের মতো সন্তানকে দেখতে পান না। নিজে যাওয়া ও মরদেহ আনার খরচ মিলিয়ে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়। এই শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রকল্প সেই সমস্ত শোকাহত পিতা-মাতাকে সামান্য হলেও সান্ত্বনা ও সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন যে, আর্থিকভাবে স্বচ্ছল পরিবার, যারা নিজ উদ্যোগে মরদেহ আনতে সক্ষম অথবা চিকিৎসার কারণে বহিঃরাজ্যে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই প্রকল্প প্রযোজ্য হবে না। শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রী ও অল্প বেতনে যারা বহিঃরাজ্যে কর্মরতদের জন্যই এই প্রকল্প প্রযোজ্য হবে।
অসম পুলিশের বিশেষ শাখাকে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ করেন যাতে এই হেল্পলাইনের নম্বরগুলি ব্যাপক প্রচার করা হয়, যাতে বিপদের সময় সাধারণ মানুষ এই সেবার সুবিধা পেতে পারে।

No comments:
Post a Comment