জুবিন গার্গের অকাল প্রয়াণে শ্রদ্ধাঞ্জলি; পাণ্ডুর বিসর্জন ঘাটে এবার বাজবে না সাউন্ড সিস্টেম; আধ্যাত্মিক পরিবেশেই সম্পন্ন হবে প্রতিমা বিসর্জন প্রক্রিয়া
গুয়াহাটি, ২৬ সেপ্টেম্বর : অসমবাসীর প্রাণের শিল্পী জুবিন গার্গের অকাল প্রয়াণে গোটা রাজ্য শোকাহত। এমনকি আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবেও এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়েছে। অধিকাংশ পূজা উদযাপন কমিটি রাত্রিকালীন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাতিল করার পাশাপাশি বহু কর্মসূচি বাতিল করে শুধুমাত্র মাঙ্গলিক বা আধ্যাত্মিক পরিবেশে পূজা উদযাপনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।
এমনকি শারদীয়া দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জনের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত গুয়াহাটির পাণ্ডু ঘাটতেও এবার বিসর্জন প্রক্রিয়া শুধুমাত্র মাঙ্গলিক তথা আধ্যাত্মিক পরিবেশে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে সম্পন্ন হবে বলে ঘোষণা করেছে পাণ্ডুঘাট বিসর্জন কমিটি। এই উপলক্ষে ২৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার পাণ্ডুস্থিত জালুকবাড়ি নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে, জালুকবাড়ি উপ-জেলা আয়ুক্ত কার্যালয়ের উদ্যোগে পাণ্ডুঘাট বিসর্জন কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি নিমাই চন্দ্র দাস। উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন সাধারণ সম্পাদক দ্বিজেন লহকর ও কার্যকরী সভাপতি শ্যামল ভট্টাচার্য উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানান। সভার শুরুতেই সদ্যপ্রয়াত শিল্পী জুবিন গার্গের আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নীরব প্রার্থনা পালন করা হয়। পাশাপাশি এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানানো হয়।
অন্যদিকে জালুকবাড়ি উপ-জেলার আয়ুক্ত জীবন কৃষ্ণ গোস্বামী সভায় উপস্থিত থেকে বলেন, যেহেতু জুবিন গার্গের অকাল প্রয়াণে সবাই শোকাহত, তাই এবছর পাণ্ডুঘাটে পূর্বের মতো উৎসবমুখর পরিবেশে নয়, বরং মাঙ্গলিক ও আধ্যাত্মিক আবহে প্রতিমা বিসর্জন করতে হবে। এছাড়াও পূজা উদযাপন কমিটিগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে সন্ধ্যার আগেই ব্রহ্মপুত্রে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। বিসর্জনের সময় কোনো সাউন্ড সিস্টেম বা ডিজে ব্যবহার করা যাবে না।
সভায় উপস্থিত ছিলেন গুয়াহাটি পশ্চিম জেলার অতিরিক্ত উপ-আয়ুক্ত মৈত্রেয়ী ডেকা, জালুকবাড়ি আঞ্চলিক সহকারী আয়ুক্ত অনুকূল মালাকার, ট্রাফিক শাখার সহকারী আয়ুক্ত দীপজ্যোতি দাধরা ও প্রিয়া বড়ো, জালুকবাড়ি থানার ওসি কঙ্কন মহন্ত সহ পুলিশ, এসডিআরএফ, শক্তি, লোক নির্মাণ, গুয়াহাটি পৌরনিগম, অভ্যন্তরীণ জলপরিবহন, অগ্নি ও জরুরি পরিষেবা বিভাগের বহু কর্মকর্তা।
সভা শেষে সকল উপস্থিত সদস্য পাণ্ডুঘাট প্রতিমা বিসর্জন ঘাট পরিদর্শন করেন এবং বিজয়া দশমী ও পরবর্তী দিনে কীভাবে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে বিসর্জন সম্পন্ন করা যায় তার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
জানা গেছে, এ বছর গুয়াহাটি মহানগরে মোট ১০১টি দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পূজার দিনগুলোতে নিরাপত্তার জন্যও পুলিশ বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানা গিয়েছে।


No comments